Home কবিতা ছেঁড়া মেঘ

ছেঁড়া মেঘ

সেই সব শব্দরা জেগে ওঠো পাতা পত্রের ভিড় ঠেলে
জ্বরের তাপ মেপে ধরো স্পন্দিত শ্বাসের গতি বুকের ভাষা।
জীবন পুড়ছে সংজ্ঞাহীন আগুনে অনেক চোখের চুলায়
চুল্লির ধোঁয়ায় ঢেকে আছে আকাশ পাখিরাও হারাচ্ছে পথ।
জলের ঘোড়া হয়ে এসেছি এখানে ঢেউয়ের চোখে
মানুষের কানকোতে হরিণের শিং এখন ডাল দেয়।
আমাদের শব্দরা মৃত কাকের মুখে লেগে আছে বোবা আদরে
আর দূরের বেদেনীরা কুড়িয়ে নিচ্ছে শবের বাহন।
জানি এইসব লোকের মুখে রুচবে না ভালোলাগায়
তবুও সৎকারের এক কাঠি আগরবাতি জ্বালিয়ে পুড়বে হৃদয়।

শবর, তুমি কোন নদীর কাছে থাকো? অরণ্য, পাহাড় ঘুরে খুঁজি চন্দ্র তারার পথ
মাটির তনুতে লুকিয়ে থাকা ফলের আত্মায় আত্মীয় সংসার।
আমি বহুকাল তোমাকে খুঁজে চলেছি নদীর তটরেখায়
কৈবর্ত পাড়ায় কাটিয়েছি জীবন
মৎস্যের মতো জেগে থেকে উৎকণ্ঠায় বিনিদ্র রাত।
শবর, তুমি সেই আত্মীয়!  উঁচু টিলায়  যার বাস
শিকার-ব্যস্ততায় বনের গভীরে ছড়ানো জীবনের শর।
তোমাকে পাইনা বহুদিন,  শবরী প্রেম বুকে নিয়ে নির্ঝরের কাছে বসে
বাতাসের হাহাকার শুনি,  পতনের সাথে জলের ভেসে যাওয়া দেখি।
এভাবেই ভেসে যায়  নিষাদ পৃথিবী,  শবরী প্রেম
বুকে জেগে থাকে নদীর টান,  তোমাকে পাওয়ার বাসনা।

ছেঁড়া মেঘগুলি মাদুর হয়ে আসে
বাতাসের শয়ানে ভেসে বেড়ায় রূপকথার জাদুকর ;
অন্ধের গলিতে চিৎ হয়ে থাকি সাদা তুলার হরিণ
জানতে চাই নিরুত্তর সময়ের কোলাহল আর চোখের ভাষা।
যেটুকু রং মুছে না পাতা-পত্রে ক্লোরোফিল মেখে ছুঁই
রাতের কালিতে আঁকি জীবনের বুদবুদ সাঁকো পার হয়ে যাই।
মেঘের মাদুরে বসি তারপর এক পেয়ালা রোদে চুমুক দিই
তুমি তখন বাতাসের ওলানে বাটি ধরে রাখো নির্ভার।

**
কেউ কেউ চোখ দিয়ে নয় দেখে জিহবায়,  কারজিতে লুকায় নিজেকে
ইনবিজিবল রোদের আড়ালে মিশে যায়।
তালপাতার চরকিতে বাতাসের ঘোড়া লেজে খেলায়
ধোঁয়া ধোঁয়া চোখে মেঘপুঞ্জ দলেবলে খেচর।
আমাদের দৃষ্টি-গ্রাহ্যতা হারায় অবতলে
পাখির মাংসে ঘ্রাণ ছড়ায়।

**

আমি সেই সব নদীর মুখে বাঁধ দিই চন্দ্র সূর্য দিয়ে
সমুদ্রকে ছুঁতে পারা যে হাতির শূঁড়  উলটে দেয় পৃথিবী 
হাঁড়িতে ভরে রাখে গোলার্ধের মুখ
তুমি তাকিয়ে থাকো বোবার মতো হরিয়াল পাখি
পেন্ডুলামে দুলে মানুষের আলো নদীর দুই দিকে।

Related Posts

Leave a Comment

-
00:00
00:00
Update Required Flash plugin
-
00:00
00:00